• শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০৫:১১ অপরাহ্ন
  • [gtranslate]
Headline
জলঢাকায় পাথরবোঝাই ট্রাকে তল্লাশি, মাদক সহ চালক আটক কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের জামায়াতের এমপি প্রার্থী মুফতি আমীর হামজা দীর্ঘ অনুপস্থিতির অভিযোগে পবিপ্রবির শিক্ষক বরখাস্ত সিরাজগঞ্জে ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড রংপুরে মানবাধিকার ও যুবসমাজের ভূমিকা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং রিপোর্টের বিতরণ ও আলোচনা বিষয়ক সেমিনার বেরোবির একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বাণিজ্যযুদ্ধ অবসানের আভাস যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাবার নামে ঠিকাদারী লাইসেন্স, যা বললেন আসিফ মাহমুদ রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : এক যুগেও মেলেনি বিচার

কেমন হবে আগামীর পবিপ্রবি? কি আছে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশায়? 

পবিপ্রবি প্রতিনিধি, / ৯৭ Time View
Update : সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৪

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) দক্ষিণ বঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ। ঐতিহ্যবাহী এবং বিশ্বখ্যাত এ বিশ্ববিদ্যালয় সুনাম কুড়িয়েছে দেশ থেকে বিদেশে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ টি অনুষদে মোট ৪ হাজারের অধিক শিক্ষার্থীরা রয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা থেকে রাত ক্লাস পরীক্ষা, এসাইনমেন্ট ও টিউশনের ব্যস্ততায় কাটে পবিপ্রবিয়ানের দৈনন্দিন জীবনের একাংশ। জুলাইয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে নতুন করে প্রান পায় পবিপ্রবি। অবসান ঘটে ফ্যাসিস্ট সরকার ও তার সহযোগীদের। পবিপ্রবির নতুন উপাচার্য হয়ে আসেন বিশ্ববরেণ্য গবেষক ও শিক্ষক বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম। যোগদানের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাজ ও গতিশীলতা দেখে সন্তুষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা- কর্মচারী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতির মধ্যে থেকে নুতন উপাচার্য পাওয়ায় পবিপ্রবি উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা টা বরং একটু বেশি। কি আছে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশায়? সেটিই জানার চেষ্টা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সফিকুল ইসলাম।

 

 

 

 

 

মাদক ও র‍্যাগিং মুক্ত সুশৃঙ্খল ক্যাম্পাসের দৃষ্টান্ত হোক পবিপ্রবি

 

 

 

 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রায় ১৪০০ শত মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা ফিরে পেয়েছি নতুন স্বাধীনতা। নতুন ভাবে তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে প্রত্যাশার পরিমাণ অনেক বেশি। মাননীয় উপাচার্য মহোদয় যোগদানের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের বেশ কিছু চমৎকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন যা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা এমন একটা ক্যাম্পাস চাই যা হবে সুস্থ ও মাদক মুক্ত। মাদক পুরোপুরি নির্মূল করতে সকল ধরনের উদ্যোগ করার প্রত্যাশা করছি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা অসুস্থ সংস্কৃতি হচ্ছে রেগিং।  এই অপসংস্কৃতি বন্ধে এবং বিভিন্ন ভাবে ছাত্র হয়রানি বন্ধে সকল উদ্যোগ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে মেধার ভিত্তিতে সিট বন্টন ডাইনিং এর ভালো মান নিশ্চিত করতে হবে। পবিপ্রবির দুঃখ সৃজনী থেকে এম কেরামত আলী হলের রাস্তা। বিভিন্ন সময়ে রাস্তা পূননির্মাণের আন্দোলন করলেও দীর্ঘদিনে কোনো যথাযথ পরিবর্তন চোখে পড়েনি। রাস্তাটি দূত নির্মানের জোর দাবি জানাচ্ছি। বিগত সরকারের আমলে গঠিত সকল নির্যাতন ও দূর্নিতিতে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষার জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

 

 

 

-ফরিদুল ইসলাম

 

শিক্ষার্থী, খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান অনুষদ

 

 

 

 

সংস্কার হোক বিগত ১৬ বছরের ক্ষত

 

 

 

 

আমার ভাইয়েদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশর দ্বিতীয় বিজয়। বিগত ১৬ বছরের সকল অনিয়ম দুর্নীতি ও ভংঙ্গুর কাঠামোর সংস্কার চাই। যেকোনো ধরনের দুর্নীতি যাতে ক্যাম্পাসে প্রশ্রয় না পায় সে দিকে খেয়াল  রাখতে হবে পবিপ্রবি প্রশাসনের। অনুষদ কেন্দ্রিক বৈষম্যের শিকার  পবিপ্রবির কিছু অনুষদ। বিশেষ করে আইন ভুমি প্রশাসন অনুষদের নিজস্ব কোনো ভবন নেই। অন্যান্য অনুষদের থেকে সুযোগ সুবিধা দিক থেকে আইন ও ভুমি প্রশাসন অনুষদ অনেক পিছিয়ে। এই দিকগুলো প্রশাসনেকে গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য অনুরোধ থাকবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ শিক্ষার্থীদের সাথে সবসময় সুলভ আচারন করবেন এবং সুসম্পর্ক বজায় রাখবেন। প্রায় সময়েই পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়া একটা ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে এবং বিভিন্ন কারণে সেশনজটের মুখে পড়েছে শিক্ষার্থীরা যা থেকে মুক্ত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। বহিরিগতদের উৎপাত বন্ধ করতে পদক্ষেপ নিয়ে সার্বিক বিষয়ে সমৃদ্ধশালী করতে সকল উদ্যোগ গ্রহণ করায় দাবি থাকবে পবিপ্রবি উপাচার্য বরাবর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে হবে যাতে একজন শিক্ষার্থীর দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়।

 

 

 

-নূরনবী সোহান

 

শিক্ষার্থী, আইন ও ভূমি প্রশাসন অনুষদ

 

 

 

 

ক্ষমতার অপব্যবহারকে রুখতে হবে, দূর করতে হবে সকল সীমাবদ্ধতা

 

 

 

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সু্যোগ পাওয়া নিঃসন্দেহে অনেক সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ।কিন্তু এখানে পড়তে আসা আমার মত অনেক শিক্ষার্থীদের হতাশ করে এখানকার সীমাবদ্ধতা।

 

একটি ক্যাম্পাসে  বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকা গুরুত্বপূর্ণ, যা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে সমৃদ্ধ করে এবং তাদের সামগ্রিক উন্নয়নে সহায়তা করে।  পবিপ্রবিতে বিভিন্ন কাঠামো নামমাত্র পরিচালিত হয় এবং সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা নেই। লাইব্রেরি থাকলেও সেখানে পর্যাপ্ত বইয়ের অভাব। চেয়ার টেবিলের ঘাটতির কারনে শিক্ষার্থীরা পড়ার সু্যোগ পায় না।আধুনিক ল্যাবরেটরি সুবিধা থেকে বঞ্চিত ল্যাবরেটরিতে নেই পর্যাপ্ত লোক। প্রাকটিকাল জ্ঞান অর্জন ছাড়াই শুধুমাত্র খাতায় লিখে তা মুখস্ত করে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার পাশ করে। রয়েছে পর্যাপ্ত ক্লাসরুমের অভাব। ক্লাসরুমে আধুনিক সুযোগ সুবিধার ঘাটতি। সংস্কার দরকার খেলাধুলার মাঠ, জিমনেশিয়াম এবং অন্যান্য বিনোদনমূলক ব্যাবস্থার।

 

বরিশাল ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য পরামর্শ পাওয়া দুষ্কর। বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে।এম্বুল্যান্স নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং, ইন্টার্নশিপ এবং চাকরির সুযোগ সম্পর্কে তথ্য প্রদান বিষয়ক সংস্থাগুলো নিষ্ক্রিয় থাকে। পর্যাপ্ত সু্যোগের অভাবে কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া গুলোতে স্বাস্থ্যকর এবং সাশ্রয়ী মূল্যের খাবারের ব্যবস্থা করা সময়ের দাবি। পরিবহন শাখায় নেই পর্যাপ্ত বাস। শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে ও ঝুলে যাচ্ছে বরিশাল ও পটুয়াখালী। এসকল সমস্যাগুলো খতিয়ে দেখে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্যার সমাধান করা গেলেই শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় তাদের স্বপ্ন পূরণেরও সিঁড়ি হয়ে উঠবে।

 

 

 

-সুমাইয়া আমিন

 

শিক্ষার্থী, এনিম্যাল সাইন্স ও ভেটেনারী মেডিসিন অনুষদ

 

 

 

 

প্রশাসনের জবাবদিহিতা ও গবেষণা খাতে পর্যাপ্ত পর্যাপ্ত বরাদ নিশ্চিত করতে হবে

 

 

 

 

বিশ্ববিদ্যলয় শিক্ষার্থীদের ভাবনার বিকাশ ঘটানোর জায়গা। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে, অপসংস্কৃতি বাজে চর্চার ভিতর দিয়ে শত শত পিতা মাতার স্বপ্ন ভেঙ্গে যাচ্ছে।  বুলিং, নেশা, বেহায়াপনা ও বিভিন্ন ধর্মে পরিপন্থী কাজ বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি। পবিপ্রবি শিক্ষর্থীদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একটাই দাবি জবাবদিহিতা মূলক একটি প্রশাসন আমাদের দিন।  পাঠদানের ন্যূনতম কাজটিতে শিক্ষকদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। পাঠদান শিক্ষকের প্রথম কাজ, দ্বিতীয় কাজ গবেষণা। তাই শিক্ষকের আগ্রহ ও সামর্থ্য অনুযায়ী ক্লাস ও কোর্স বণ্টনের ব্যবস্থা গড়ে তোলা যেতে পারে এবং তাঁদের স্বীকৃতি ও প্রমোশন সেই আলোকে হতে পারে। গবেষণার জন্যে সরকার থেকে যথেষ্ট বরাদ্দ দিতে হবে। গবেষণার অনুদান প্রাপ্তিতে দলগত পরিচয়ের প্রাধান্য বন্ধ করতে হবে। বিদেশে গবেষনার নামে ভ্রমন বন্ধ করতে হবে। গবেষনা পেপারের সংখ্যা না বাড়িয়ে গবেষণার মান বাড়ানো উচিৎ।  বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের সাথে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ ও আদান-প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ফান্ডসমেত সার্বক্ষণিক পিএইচডি-এমফিল ডিগ্রি চালু করতে হবে। অবশেষে সকলের প্রচেষ্টায় পবিপ্রবি এগিয়ে যাওয়া সম্ভব বিশ্ব দরবারে।

 

Facebook Comments Box


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
bdit.com.bd
error: Content is protected !!