• বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:০৪ অপরাহ্ন
  • [gtranslate]
Headline
ঠাকুরগাঁওয়ে চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে যুবকের মৃত্যু কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আওয়ামী লীগ নেতার কাছে পাওনা টাকার দাবীতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে ইট ভাটা মালিকরা ৬ কোটি টাকার মার্কেট শ্রমিকদল নেতার দখলে, তুলছেন ভাড়া কালিয়াকৈর তারুণ্য মেলা ও পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত বেরোবি ইংরেজি বিভাগ অ্যালামনাইয়ের সভাপতি সোহেল, সাধারণ সম্পাদক শামিম বাংলাদেশে হাত বোমা ছুড়লো ভারতীয়রা, কেটে ফেললো শতাধিক গাছ ১৭ বছর পর কারামুক্ত লুৎফুজ্জামান বাবর কুষ্টিয়ায় বিএনপির সন্ত্রাসীদের হামলায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় জামায়াত কর্মীর মৃত্যু বেরোবির বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা সমিতির নেতৃত্বে সজীব-মুবিন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় জাসদের হামলায় জামায়াতের ৩৫ জন রক্তাক্ত জখম

ভাষা সৈনিক পরিবারের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ- কেয়ারটেকারের বিরুদ্ধে

Reporter Name / ১০১ Time View
Update : বুধবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪

মোঃ সাবিউদ্দিন: ময়মনসিংহে অভিনব কায়দায় জাল-জালিয়াতি করে এক ভাষাসৈনিক পরিবারের তিনতলা বাড়ি ও জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাড়ির কেয়ারটেকারের বিরুদ্ধে। যে মালিকের বাড়িতে করতেন চাকরি সেই বাড়িটিই দখল করে নিয়েছেন তিনি। মামলার ফাঁদে পরে জীবনসায়াহ্নে এসে নিজ পৈতৃক ভিটা ফিরে পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভাষা সৈনিক ও কৃষি বিজ্ঞানী ড. ভুইয়া নুরুল ইসলামের স্ত্রী বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নার্গিস আনার বেগম।

গণমাধ্যম এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে কীভাবে অস্তিত্বহীনের নামে জন্মসনদ ও ওয়ারিশান সার্টিফিকেট তৈরি করে কৌশলে লিখে নেওয়া হয়েছে জমি ও বাড়ি।

ময়মনসিংহ বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নার্গিস আনার বেগমের ১৯৮৮ সালে নির্মাণ করা বাড়িসহ ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ জায়গা জাল-জালিয়াতি করে ২০২২ সালে দখল করে নিয়েছে তারই বাসার কেয়ারটেকার। জমির বিআরএস রেকর্ডে ভুলে নার্গিস আনার বেগমের নামের স্থানে নাম ওঠে উপেন্দ্র কিশোর তরফদারের। বাসার কেয়ারটেকার আব্দুল হাই এটি টের পেয়ে অন্য এক ব্যক্তিকে উপেন্দ্র কিশোর সাজিয়ে নিজের ও স্থানীয় আরও ১৭ জনের নামে সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন। এর মধ্যে আদালতে মামলা করে নাম সংশোধন করেন নার্গিস আনার বেগম। তবে ততদিনে কেয়ারটেকার আব্দুল হাই নতুন মালিক সেজে বাড়ি থেকে তাকেই বিতাড়িত করেন।

গণমাধ্যম কর্মীর অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে, উপেন্দ্র কিশোরের নামে একটি জন্মনিবন্ধন করা হয় জেলার তারাকান্দার কাকনী ইউনিয়ন পরিষদে। তবে নিবন্ধনের সময় বিধি মোতাবেক কোনো কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়নি। উপেন্দ্র কিশোরের নামে যে মোবাইল নম্বরটি ব্যবহার করা হয়েছে এটির মালিক আব্দুল কাদির নামে এক ব্যক্তি। স্থানীয় প্রভাবশালীদের নিয়ে করা হয়েছে জমি রেজিস্ট্রি। জায়গা দখল করে সাজানো হয়েছে মামলার ফাঁদ। স্বামী ভাষাসৈনিক ও কৃষি বিজ্ঞানী ড. ভুইয়া নুরুল ইসলাম মারা গেছেন। এখন নার্গিস আনার বেগম শেষ বয়সে এসে পৈতৃক ভিটা ফিরে পেতে ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে।

তারাকান্দা উপজেলার কাকনী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মঞ্জুরুল হক বলেন, এখানে অবৈধ উপায়ে জন্ম নিবন্ধন করা হয়েছে। উপেন্দ্র কিশোর নামে আমার ওয়ার্ডে এমন কোনো ব্যক্তি নেই। তবে ইউনিয়ন পরিষদে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জন্ম নিবন্ধনে যে মোবাইল নাম্বারটি দেওয়া ছিল তার নাম আব্দুল কাদির।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হামিদা পারভিন বলেন, আমার স্বাক্ষর থাকলেও যে প্যাডে ওয়ারিশান সার্টিফিকেট নেওয়া হয়েছে তা জাল-জালিয়াতের মাধ্যমে নিয়েছে। এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল হাই বলেন, আমাকে দুই শতাংশ খালি জায়গা দিয়েছিল নার্গিস আনার বেগম। সেই জায়গায় আমি বাড়ি বানিয়েছি। অন্য আরো ১৭ জন মিলে কীভাবে জমি কিনেছে তা আমি জানি না। উপেন্দ্র কিশোর নামে যে ব্যক্তি জমি দলিল দিয়েছে তাকে আমি চিনি না।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপেন্দ্র কিশোরের নামে একটি জন্মনিবন্ধন করা হয় জেলার তারাকান্দার কাকনী ইউনিয়ন পরিষদে। অথচ ৯ নং ওয়ার্ডে এই নামে কোনো ব্যক্তির অস্তিত্ব নেই।

ভাষা সৈনিক ও কৃষি বিজ্ঞানী ড. ভুইয়া নুরুল ইসলামের স্ত্রী সাবেক প্রধান শিক্ষক নার্গিস আনার বেগম বলেন, আমি কষ্ট করে আমার চাকরির টাকা দিয়ে তিনতলা বাড়িটি বানিয়েছিলাম। আমার ছেলেমেয়েরা বাইরে থাকে। আমি ঢাকায় থাকায় কেয়ারটেকার হিসেবে আব্দুল হাইকে নিজ বাড়িতে থাকতে দিয়েছিলাম। তার তিন সন্তানের পড়াশোনার দায়িত্বও নিয়েছিলাম আমি। পাশাপাশি বিদ্যাময়ী স্কুলে ঝারুদারের চাকরি দিয়েছিলাম। সহজসরল ভেবে সব দায়িত্ব দিয়েছিলাম হাইকে। সেই সরলতার সুযোগে জাল দলিল করে ভুয়া মৃত্যুর সনদ বানিয়ে আমার বাড়ি দখল করে নিয়েছে সে।

ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, একজন ভাষাসৈনিক ও প্রধান শিক্ষকের বাড়ি জাল জালিয়াতের মাধ্যমে দখল করে নেওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। সরকারের একজন প্রতিনিধি হিসেবে একজন ভাষা সৈনিক ও প্রধান শিক্ষকের পাশে থাকব আমরা। যারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Facebook Comments Box


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
bdit.com.bd
error: Content is protected !!