• বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১৪ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]
Headline
ঠাকুরগাঁওয়ে চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে যুবকের মৃত্যু কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আওয়ামী লীগ নেতার কাছে পাওনা টাকার দাবীতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে ইট ভাটা মালিকরা ৬ কোটি টাকার মার্কেট শ্রমিকদল নেতার দখলে, তুলছেন ভাড়া কালিয়াকৈর তারুণ্য মেলা ও পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত বেরোবি ইংরেজি বিভাগ অ্যালামনাইয়ের সভাপতি সোহেল, সাধারণ সম্পাদক শামিম বাংলাদেশে হাত বোমা ছুড়লো ভারতীয়রা, কেটে ফেললো শতাধিক গাছ ১৭ বছর পর কারামুক্ত লুৎফুজ্জামান বাবর কুষ্টিয়ায় বিএনপির সন্ত্রাসীদের হামলায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় জামায়াত কর্মীর মৃত্যু বেরোবির বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা সমিতির নেতৃত্বে সজীব-মুবিন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় জাসদের হামলায় জামায়াতের ৩৫ জন রক্তাক্ত জখম

ভাইস চেয়ারম্যানের অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিতে রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংসের মুখে

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১১৩ Time View
Update : সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের নামে প্রতিষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় প্রথম ও একমাত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়’।
বিশ্ববিদ্যালয়টির জমি ক্রয় করা থাকলেও কুষ্টিয়া শহরে ভাড়াকৃত ভবনে ৯ বছর ধরে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে জানা গেছে ।

বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান ড. জহুরুল ইসলাম তার ছোট ভাই, স্ত্রী, জামাতা, ফুপাতো ভাইরা, ফুপাতো শ্যালক, বাড়ির কাজের মেয়ে, ব্যক্তিগত ড্রাইভার ও তার আজ্ঞাবহ ব্যক্তিদের চাকরি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ আছে, ভাইস চেয়ারম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যান্য সদস্যদের তোয়াক্কা না করে ভিসি সহ কয়েকজন শিক্ষকের সহযোগিতায় একের পর এক অপকর্ম চালিয়ে যাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের মুখে পড়েছে।

রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগকারীরা জানান, সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সহযোগিতায় রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন পাওয়ার সময়কালে ভাইস চেয়ারম্যান ড. জহুরুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানের কোন সদস্যকে না জানিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তার নাম লিপিবদ্ধ করলে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের সাথে তার মতানৈক্য হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়টি এখনো জয়েন স্টক কোম্পানিতে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেনি। কয়েকজন ট্রাস্টির রদবদলের কারণে নতুনভাবে দলিল সম্পাদনের প্রয়োজন হলেও ভাইস চেয়ারম্যানের গাফিলতির কারনে করা হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভিসি, ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রারসহ অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য রয়েছে। বিগত সরকারের আমলে প্রো ভিসি ও ট্রেজারার নিয়োগের জন্য পৃথক প্যানেল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হলেও নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি। বর্তমানে আগের প্যানেল আবার প্রেরণের জন্য ষড়যন্ত্র চলছে বলে জানা গেছে।

রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ শাহজাহান আলী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ট্রেজারার এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস-চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম (বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য) এর যোগসাজশে রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য তৈরি করেছেন। এ দুজনের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আছেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর ও কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুর রহমান, ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. ইসমত আরা খাতুন ইংরেজি বিভাগের প্রধান মোঃ নুর উদ্দিন বলে শোনা যাচ্ছে।

তাদের দুর্নীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ-নির্বাচনী বোর্ডের বিশেষজ্ঞ সদস্যগণের প্যানেল সিন্ডিকেট কর্তৃক পাশ হওয়া সত্ত্বেও রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ-নির্বাচনী বোর্ডের নির্ধারিত বিশেষজ্ঞ সদস্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. খালিদ হাসান জুয়েলকে অন্যায়ভাবে বাদ দিয়ে সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য একজন প্রফেসরকে নিয়োগ বোর্ডের বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে দেখিয়ে উক্ত বিভাগে প্রভাষক পদে নিজেদের পছন্দমত প্রার্থী নিয়োগ প্রদান করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

অনুরূপভাবে কর্মকর্তা নিয়োগ বোর্ডের অন্যতম বোর্ড অব ট্রাস্টিজ মনোনীত সদস্য প্রফেসর ড. হালিমা খাতুনকে অবহিত না করে এবং নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ড ছাড়াই সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর পদে ড. জহুরুল ইসলামের ফুফাতো শ্যালক শাহরিয়ার ইসলামকে বিপিএড পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই গত ০৩/১১/২০২৪ তারিখে যোগদান করানো হয়। ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. নুরুদ্দিনের সুপারিশে পদার্থ বিজ্ঞানে ডিগ্রী প্রাপ্ত মোঃ সাইফুল হককে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকলেও কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে সরাসরি সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

সম্প্রতি কৃষি বিভাগের যোগ্যতা সম্পন্নদের আবেদনের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলে বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ডিগ্রি প্রাপ্ত একজন প্রার্থী ড. সাফিয়া ইকবাল নিয়োগ-নির্বাচনী বোর্ডের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলেও তাকে ডেমো ও মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হয়। নিয়োগবোর্ড সংশ্লিষ্ট একজন সদস্যের আপত্তি সত্ত্বেও তাকে ডেমো ও মৌখিক পরীক্ষায় অবৈধভাবে নির্ধারিত নম্বর এর চেয়ে বেশি নম্বর প্রদান করে নিয়োগ প্যানেলে দ্বিতীয় স্থানে রেখে নিয়োগ প্যানেল প্রস্তুত করা হয়েছে।

বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম অন্যায়ভাবে তার সহধর্মিনী ড. মোছাঃ ইসমত আরা খাতুনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই ইসলামী ইতিহাস বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ দিয়েছেন। বোর্ড অব ট্রাস্টিদের একাধিক সদস্য বিরোধিতা করার ফলে বছর খানেক আগে প্রথম শ্রেণীর জাতীয় দৈনিকে রেজিস্ট্রার সহ অন্যান্য পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। অনেক যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থী আবেদন করলেও তাদেরকে অযোগ্য গণ্য করে রেজিস্ট্রার নিয়োগ বোর্ড করা হয়নি এবং এ পর্যন্ত কোন পূর্ণ রেজিস্টারও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বরং যথাযথ যোগাতা না থাকা সত্ত্বেও তার সহধর্মিনী ইসমত আরাকে পূর্ণ রেজিস্টার হিসেবে নিয়োগ দেবার একাধিকবার অপচেষ্টা করা হয়েছে। তার ভাইরা ভাই শরিফুল ইসলামকে ,তার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রমোশন সেলে নিয়োগ দেয়া হয়। বাড়ির পরিছন্নতা কর্মী কুসুম রানীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছলো। তিনি আমেরিকায় যাওয়ার পূর্বে তার ব্যক্তিগত ড্রাইভার মোঃ শামীম হোসেনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রমোশন সেলে নিয়োগ দিয়ে যান। আপন ছোট ভাই শোয়েব মাহমুদ আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ দিয়েছেন, জামাতা পারভেজ আহমদকে আইন বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ দেখিয়ে আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ করে দেন। বিষয়গুলো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলের মাঝে অসন্তোষ ও হতাশা বিরাজ করছে।

রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শাজাহান আলী ভাইস চেয়ারম্যানের সাথে যোগসাজশে অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ভাইস চেয়ারম্যানের নিকট আত্মীয় কেউ রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি করেনা। ভাইস চেয়ারম্যানের স্ত্রী ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত কি-না প্রশ্নে জানান ছুটিতে ভাইস চেয়ারম্যানের স্ত্রী আমেরিকা তার পরিবারের কাছে গেছে। আর হয়তো ফিরবে না। ভাইস চেয়ারম্যানের আত্নীয়, ড্রাইভার ও বাড়ির কাজের মেয়ের চাকরির বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

Facebook Comments Box


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
bdit.com.bd
error: Content is protected !!